আবদুর রহমান খান

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বক্তাগন ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার দলন বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে কার্যকর ভুমিকা পালনের আহবান জানিয়েছেন।

কাশ্মীর কাউন্সিল ইউরোপ (কেসিইইউ)- এর উদ্যোগ ইউরোপে কাশ্মির সপ্তাহ পালন উপলক্ষ্যে ব্রাসেলসে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গত সোমবার কাশ্মিরের বিষয়ক এক ফটো প্রদর্শনীর মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপি এ কর্মসুচী শুরু হয়েছে। এ সময় ব্রাসেলসে বেশ কয়েকটি আন্তর্জতিক সম্মেলন, সংবাদ সম্মেল এবং গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয় নেতাদের সাথে বৈঠক করার কথা রয়েছে বলে আজ জানিয়েছে, কাশ্মির মিডিয়া সার্ভিস ( কে এম এস)

কাশ্মির সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইউরোপের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী এবং লেখক এন্ডরে বার্কস বলেছেন, সম্প্রতি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিপক্ষে ইউরোপ যেভাবে ইউক্রেনের পক্ষে সোচ্চার ভুমিকা রেখেছে সেভাবে কাশ্মিরের পক্ষে তারা দাঁড়ায় নি। কাশ্মিরী জনগনের পক্ষে ইউরোপকে অবশ্যই কথা বলতে হবে।

অনুষ্ঠানে ইউরোপের আর একজন বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক মিকুলাস ক্রিভানসকি কাশ্মিরী জনগনের মুক্তির লড়াইকে প্রশংশা করেন । অন্যান্য বক্তাগন কাশ্মিরী জনগনের ওপর পরিচালিত ধারাবাহিক নিপীড়ন বন্ধ করার দাবী জানিয়েছেন। একই সাথে কাশ্মিরীদের আত্ম-নিয়ন্ত্রনের অধিকার নিশ্চিত করতে দখলদার ভারতের ওপর চাপ বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছেন।

এদিকে ভারতীয় কংগ্রেসের কাশ্মির চ্যাপ্টার নরেন্দ্র মোদীর সরকারের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে তারা সত্য আড়াল করে কাশ্মিরের মানুষদের বিরুদ্ধে সব রকম অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় কংগ্রেসের কাশ্মির চ্যাপ্টারের সভাপতি ওয়াকার রাসুল ওয়ানি মারমুল্লা এলাকায় এক জন সমাবেশে বলেছেন, কাশ্মিরের মানুষ আজ চরম নির্যাতনের শিকার। অভাব, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং অবরুদ্ধ অবস্থায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

ওদিকে জম্মু-কাশ্মিরের সর্বদলীয় হুররিয়াত কনফারেন্স দাবী করেছে ভারতের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের কবলে অবরুদ্ধ থেকে জম্মু-কাশ্মিরের মানুষ আজ নির্কৃষ্টতম নির্যাতনের শিকার। সেখানে মানবাধিকার চরমভাবে পদদলিত।

শ্রীনগরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হুররিয়াত কনফারেন্স ভারতকে অভিযুক্ত করে বলেছে, জম্মু-কাশ্মিরে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন রাখা হয়েছে; বিচার বিভাগ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে আর মিডিয়া সাম্প্রদায়িক ভুমিকা পালন করছে ।

বিবৃতিতে হুররিয়াত নেতা জমরুদা হাবিব, ফরিদা বাহেনজি, মুহাম্মদ খান সোপোরী এবং ডঃ মুসাইব বলেছেন, প্রতিদিন তালিকা ধরে যুবক আর প্রতিবাদী নাগরিকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা আইন( পিএসএ) নামের কালাকানুন প্রয়োগ করে জেলে ভরা হচ্ছে । হুররিয়াত নেতৃবৃন্দ , প্রতিবাদি যুবক, বৃদ্ধ সহ সব বয়সের নাগরিকদের অনির্দিষ্ট সময় ধরে জেলখানায় আটকে রাখা হচ্ছে। এভাবে গন্তন্ত্রের নামে ভারত নির্যাতন চালিয়ে কাশ্মিরীদের কন্ঠ চেপে রাখার অপচেষ্টা করছে।

বিবৃতিতে সর্বদলীয় হুররিয়াত কনফারেন্স-এর চেয়ারম্যান মাসাররাত আলাম ভাট সহ শীর্ষ স্থানীয় জনা বিশেক নেতাকে আটক রাখার নিন্দা জানানো হয়েছে। এ সব বর্ষিয়ান নেতাদের বেআইনী ভাবে আটক রাখার ঘটনাকে চরম রাজনৈতিক নিপীড়ন হিসেবে আখ্যায়িত করে হুররিয়াত কনফারেন্স দৃঢ়তা ব্যাক্ত করে বলেছেন এসব অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে কাশ্মিরীদের স্বানীতার আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবেনা।

(নভেম্বর ১৭