অনলাইন ডেস্ক:

মাটির ঘরের ভাঙা জানালা দিয়ে বর্ষায় ঢুকত বৃষ্টির পানি, শীতের সময় হু হু করে ঠান্ডা। দিনমজুর বাবা জালাল আহমেদ আর গৃহিণী মা শামসুন্নাহার ছেলেমেয়েদের নিয়ে স্বপ্ন দেখবেন কী, দারিদ্র্যের কশাঘাতে ঠিকভাবে ঘুমাতে পারতেন না। দারিদ্র্যের কাছে অবশ্য ছেলেমেয়েদের ইচ্ছা কখনো বিকোতে দেননি জালাল আর শামসুন্নাহার।

কক্সবাজারের উখিয়ার এ দম্পতি ছেলেমেয়েদের সব সময় উড়তে দিয়েছেন ইচ্ছেডানায়। সেই ডানায় উড়তে উড়তে উখিয়ার সেই জালাল ও শামসুন্নাহার দম্পতির মেয়ে শাহেদা আক্তার আজ স্বপ্ন দেখতে পারছেন, একদিন দেশের সেরা নারী ফুটবলার হবেন।

তীর–প্রথম আলো ২০২১ বর্ষসেরা ক্রীড়া পুরস্কারে গতকাল সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হয়েছেন শাহেদা। পুরস্কার হাতে নিয়ে শাহেদা তাঁর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে শুধু দেশের সেরা নারী ফুটবলারের সীমানায় আটকে থাকেননি। শাহেদা স্বপ্ন দেখেন, সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন দাসদের ছাপিয়ে একদিন তাঁর হাতে উঠবে প্রথম আলোর বর্ষসেরা পুরস্কারের ট্রফি! এমন স্বপ্ন দেখার সাহস তাঁকে মা–বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা দিয়েছেন বলে জানালেন শাহেদা, ‘আমার ফুটবল খেলার সবচেয়ে বড় প্রেরণা মা–বাবা। ছোটবেলা থেকে আমি ফুটবল খেলি। একজন মেয়ে হয়েও ফুটবল খেলতে পরিবারের কেউ আমাকে কখনো বাধা দেয়নি।’

শাহেদার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নের ভিত গড়ে দিয়েছে বাড়ির পাশের বড় মাঠ। শাহেদার ভাষায়—‘জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই’ সেই মাঠে ফুটবল নিয়ে পড়ে থাকতেন তিনি। কেন, কীভাবে আর কার প্রেরণায় ফুটবল খেলতে শুরু করেছিলেন, তা এখন আর মনে নেই সদ্য মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনো শাহেদার।

তবে ফুটবল ছিল তাঁর ধ্যান–জ্ঞান। উখিয়ার মতো জায়গায় কজন মেয়েই আর ফুটবল খেলবে! শাহেদাকে তাই খেলতে হতো ছেলেদের সঙ্গে। ছেলেদের সঙ্গে খেলতে খেলতেই তাঁর স্কিল এত ভালো হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
-প্রথম আলো