আব্দুস সালাম,টেকনাফ(কক্সবাজার):
কক্সবাজারের টেকনাফ সদরের নতুন পল্লান পাড়ার মালেশিয়ায় প্রবাসী মোহাম্মদ আয়ুবের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে দীর্ঘদিন যাবত অত্যাচার ও নির্যাতন করে আসছেন প্রতিবেশীরা। ন্যায় বিচারের আশায় ক্ষমতাশীল মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিচার না পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে কক্সবাজার আদালত পর্যন্ত অভিযোগ করেছে এই প্রবাসী পরিবারটি।
এ বিষয়ে মালেশিয়া প্রবাসীর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার (৩৫) বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,টেকনাফ থানাধীন সদর ইউপিস্থ নতুন পল্লান পাড়ায় আমার একতলা বিশিষ্ট বসত ভিটার দক্ষিণ পার্শ্বে ১নং অভিযুক্ত পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কায়ুকখালী পাড়ার মৃত সত্তরের ছেলে আবু ছিদ্দিক প্রকাশ মুক্তমণি (৩৫) এর নিজ মালিকানাধীন জমিজমা রয়েছে। ১নং অভিযুক্ত একজন প্রকৃত তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং অপরাপর অভিযুক্ত ব্যক্তিগনও একই সিন্ডিকেটের লোক। নতুন পল্লান পাড়া এলাকায় বাড়ি-ভিটা ক্রয় করে বসবাস শুরু করার পর থেকে প্রায় সময় ১নং অভিযুক্ত বিভিন্নভাবে বাহিরের লোকজন নিয়ে আমার বসত ভিটার মধ্য দিয়ে হাটা চলা করে তাহার বসত ভিটায় থাকা রায়তি ঘরে আসা-যাওয়া করত। এমনকি প্রতিদিন গভীররাতে আমার বসত ভিটায় এসে মদ্যপ সেবন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।একাধিকবার ১নং অভিযুক্তকে আমার বসত ভিটা হতে হাটা চলা না করার জন্য বারন করলে সে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং আমার ক্ষতি সাধনের পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। আমার স্বামী দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকায় আমি দুই সন্তান নিয়ে উক্ত ঘরে বসবাস করতাম এবং আমার ঘরে উপযুক্ত কোন পুরুষ লোক না থাকার সুবাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিগন আমাকে উক্ত ঘর ভিটা বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি ধমকি প্রদান করে আসছিল। এমতাবস্থায় আমি এবং আমার দুই সন্তানের নিরাপত্তার স্বার্থে গত প্রায় ১ মাস পূর্বে নতুন পল্লান পাড়া এলাকা থেকে বসবাসরত ঘরটি তালাবদ্ধ করে টেকনাফ পৌরসভার পুরান পল্লান পাড়ার আপন ভাইয়ের বাড়িতে চলে আসি।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১০ মার্চ সকাল ৭টার দিকে আমার উক্ত ঘর তালাবদ্ধ থাকার সুযোগে ১নং অভিযুক্ত ব্যক্তির নেতৃত্বে অপরাপর অভিযুক্তরা আমার অগোচরে আমার উল্লেখিত একতলা বিশিষ্ট ঘরের চতুর দিকে ও ঘরের ভেতরে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে আমার ঘরের দেওয়াল ও ঘরের ভেতরে থাকা একাধিক মূল্যবান আসবাব ও জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় আমার উক্ত ঘরের পার্শ্ববর্তীতে থাকা প্রতিবেশী লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কোনকিছু বলতে ভয় পায়। এমতাবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিগন আমার দুই সন্তানকে অপহরন করে নিয়ে যাওয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ আমাকে উল্লেখিত ঘরের ধারে কাছে যেতে দিচ্ছে না। এতে আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভোগছি। নিরুপায় হয়ে প্রবাসীর পরিবারটি অসহায় জীবনযাপন অতিবাহিত করছে।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাসির উদ্দিন মজুমদার বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (টেকনাফ) প্রবাসীর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার বাদী হয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারী টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড নতুন পল্লান পাড়ার মৃত মোক্তার আহাম্মদের ছেলে মাহবুব আলম(৫০) কে প্রধান আসামী করে একই এলাকার আবদু শুক্কুরের মেয়ে লায়লা(মহিলা মেম্বার) ও আবু ছিদ্দিক প্রকাশ মসুমনি(৩৫) সহ ৯ জনকে আসামী করে একটি সি,আর মামলা নং-৮১/২০২৩ ইং দায়ের করেন। একই আদালতে ওই এলাকার মৃত মোক্তার আহাম্মদের ছেলে মাহবুব আলম(৫০) কে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি সি,আর মামলা নং-১৩৯/২০২৩ ইং দায়ের করেছিলেন। এসব মামলাগুলো বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। গত বছরের এপ্রিল মাসে প্রবাসীর স্ত্রী বাদী হয়ে নতুন পল্লান পাড়ার মৃত মোক্তার আহমদের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩০) কে প্রধান আসামী করে ৯ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছিলেন। (যার মামলা নং-৮৩/৩৮৪)।