প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

ব্যাপক আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে কক্সবাজারের দক্ষিণ কলাতলী শুকনাছড়ির হযরত শাহসূফী আব্দুস সোবহান আল মাইজভাণ্ডারী (রহঃ)’র ৩য় বার্ষিক ওরশ শরীফ। পবিত্র ওরশ শরীফ উপলক্ষ্যে ১২ মার্চ (রবিবার) সারাদিন মাজার শরীফ প্রাঙ্গণে বিভিন্ন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল বাদে ফজর পবিত্র খতমে কুরআন, বাদে জোহর পবিত্র খতমে গাউছিয়া, বাদে আসর মাজার শরীফ গোসল ও গিলাফ ছড়ানো অনুষ্ঠান ও বাদে মাগরিব গরীব দুঃস্থ এতিম অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

পরে বাদে এশা থেকে ওয়াজ, মিলাদ, জিকির ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে সভাপতির বক্তব্যে অত্র মাজার শরীফের পরিচালক ও হযরত শাহসূফী আব্দুস সোবহান মাইজভাণ্ডারী (রহ :)’র অন্যতম শাহজাদা হাফেজ কারি মাওলানা মুহাম্মদ কেরামত আলী মাইজভান্ডারি বলেন, আধুনিক সভ্যতা নতুন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে, ব্যাপক উৎপাদন, অকল্পনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দ্রুত পরিবহণ, মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলেছে।

তবে, আধ্যাত্মিকভাবে আমরা বিমুখ হয়েছি। যার ফলে আমাদের অভ্যন্তরীণ শান্তি, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ, সংঘাত, লঙ্ঘন, অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিশেষ করে আমাদের যুবসমাজ, আমাদের ভবিষ্যতের প্রধান প্রবর্তক অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে।

হাফেজ মুহাম্মদ কেরামত আলী বলেন, তাসাউফের অনুশীলন আধুনিক সমাজে একটি নৈতিক বিপ্লব আনতে পারে। এটি আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় মানুষকে মানুষের জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। তাই আল্লাহর অলিরা তাসাউফের উপর জোর দেয়।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন, মইনীয়া যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় পরিষদের কার্যকরী সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাফেজ মুহাম্মদ নূরুল আবছার ইমন। তিনি বলেন, আধ্যাত্মিকতা সুফিবাদ আমাদের ধর্মীয় গোঁড়ামি মুক্ত সম্প্রীতিপূর্ণ উপায়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পথ দেখায়। তেমনি একজন অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুফি ব্যক্তিত্ব ছিলেন হযরত শাহসূফী আব্দুস সোবহান আল মাইজভাণ্ডারী (রহ :)।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুতুবদিয়া নূরী ভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন হযরত শাহসূফী মুস্তাক আহমদ নূরী। তিনি বলেন, হযরত শাহসূফী আব্দুস সোবহান আল মাইজভাণ্ডারী (রহ 🙂 আমার অনেক আগের পরিচিত। কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে মাইজভান্ডারি তরিকা ও অসাম্প্রদায়িক মরমি দর্শন প্রচারে তাঁর অবদান ও ত্যাগ অবিস্মরণীয়।

প্রধান বক্তা হিসেবে ইসলাম ও তাসাউফের বিভিন্ন বিষয়াদির ওপর বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার খাজা মনজিল কমপ্লেক্সের পরিচালক শাহজাদা শামসুদ্দীন চিশতী। তিনি বলেন, খাজা মনজিলের প্রতিষ্ঠাতা আমার আব্বাজান শাহসূফী নূরুল আমিন চিশতি (রহ :)’র সাথে শাহসূফী আব্দুস সোবহান মাইজভাণ্ডারী (রহ :)’র সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর। প্রায় সময় দেখতাম তাসাউফ ও তরিকতের বিভিন্ন নিগূঢ় কঠিন বিষয়াদির আলোচনা পর্যালোচনা করতেন।

তিনি বলেন, এই মহান সাধকদের পদাঙ্ক অনুসরণই আমাদের ইহকালে পরকালে শান্তি ও মুক্তির পথ দেখাতে পারে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পেকুয়া আহলে বায়তে রাসুল (স.) সুন্নীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক বিশিষ্ট সুফি সংগীত শিল্পী এফ এম জাকের হোসাইন।

আরো উপস্থিত ছিলেন, সুফি সংগীত শিল্পী মুহাম্মদ আব্দুল খালেক, মোহাম্মদ নূরুল আলম, আব্দুল মালেক (মানিক), গায়ক শফিউল আলম, নজরুল ইসলাম (লক্ষ্মীপুর), সূর্য মনি, মুহাম্মদ শুক্কুর প্রমুখ।

সর্বশেষে মহানবী (সা.) ও তাঁর আহলে বাইতের প্রতি সালাত ও সালাম পাঠ করার পর আজিমুশশান ওরশ মাহফিলের আখেরি আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ ক্বারী মাওলানা মুহাম্মদ কেরামত আলী মাইজভান্ডারি। তিনি ফিলিস্তিন, সিরিয়া, ইয়েমেন, চীন রাখাইন ও কাশ্মীরের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে প্রার্থনা করেন।